

খোলা কন্ঠ নিউজ ডেস্কঃ
ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলায় অবৈধ যান চলাচলের কারনে প্রতনিয়িত দুর্ঘটনা বেড়েই চলছে। এলাকার আঞ্চলিক সড়কসহ বিভিন্ন সড়কে অবাধে চলছে অবৈধ নছিমন, করিমন, বালুবাহী ড্রাম ট্রাক ও ভটভটি। বেশ কয়েকবার প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে বন্ধ করার পদক্ষেপ নিলেও বাস্তবে তা কার্যকর হয়নি। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রশাসনের নাকের ডগায় বেশ দাপটের সঙ্গেই চলছে এসব নিষিদ্ধ যান। অজানা কারণে বন্ধ হচ্ছে না এ সব অবৈধ যানবাহন। এতে সড়ক দুর্ঘটনার সঙ্গে বাড়ছে নিহত ও আহতদের সংখ্যা। কিছু অসাধু মুনাফাভোগী ব্যবসায়ী ও ইটভাটার মালিক জমি চাষে ব্যবহৃত ট্রাক্টর কিনে ওই সকল ট্রক্টরকে ট্রাক বানিয়ে মাটি কাটার কাজে ব্যবহার করছে। এসব গাড়ি চলাচল করায় নষ্ট হচ্ছে রাস্তাঘাট।
গত ২ ফেব্রুয়ারি রবিবার সন্ধ্যায় সদরপুর টু আটরশি আঞ্চলিক সড়কে নসিমন ও মাহিন্দ্রার মুখোমুখি সংঘর্ষে সঞ্জয় দরানী (২৪) নামে এক নসিমন চালক নিহত হয়। ২১ জানুয়ারি সদরপুর টু কৃষ্ণপুর আঞ্চলিক সড়কে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল মুখোমুখি সংঘর্ষে আসিফ খাঁন (১৯) নামের এক কলেজ ছাত্র নিহত হয় এবং গত ২০২৪ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় আশরাফুল, আসলাম ও শাওনসহ একাধিক ব্যাক্তির প্রাণহানি এবং অনেকেই অঙ্গহারিয়ে অভিশপ্ত জীবন যাপন করছে। এসব অবৈধ অপ্রাপ্ত বয়স্ক গাড়ি চালকেদের কোন প্রশিক্ষন বা দক্ষতা না থাকায় যেখানে সেখানে দাঁড়িয়ে পড়ে ও হঠাৎ করেই ইউটার্ন নিয়ে বসে। যার কারণে প্রায় প্রতিদিনই ঝরছে তাজা প্রাণ। অবৈধ যানবাহনের কারণে সদরপুর বাজারের প্রধান সড়কে বাড়ছে যানজট। ইজিবাইক গুলো নির্দিষ্ট স্ট্যান্ডে অপেক্ষা না করে রাস্তার দুই পাশে দাড়িয়ে রাস্তার মধ্যেই যাত্রী ওঠা-নামা করান। রাস্তা এখন ইজিবাইক, ড্রাম ট্রাক, নসিমন ও ভটভটির দখলে থাকায় বাজারের সামনের সড়ক থেকে কলেজ মোড় যেতে ২ মিনিটের রাস্তায় ২০ থেকে ৩০ মিনিট সময় লাগে। সদরপুর উপজেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মুন্সী ইশরাত হোসেন বলেন, সদরপুরে প্রতিটি ইট ভাটার মালিকেরা ড্রাম ট্রাক ও ভটভটি বোঝাই করে বিভিন্ন এলাকা থেকে মাটি বোঝাই করে উপজেলার প্রধান-প্রধান সড়ক দিয়ে এসব মাটি তাদের ইট ভাটায় নেয়। ট্রাকে ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত মাটি বহন করার ফলে বেপরোয়া গতির ঝাকুনিতে বহু মাটি সড়কে পড়ে যায়। একটু বৃষ্টি হলেই সড়কে পড়ে থাকা মাটি পিচ্ছিল কাঁদামাটিতে রূপ নিয়ে সংঘটিত হয় সড়ক দুর্ঘটনা।
ঢেউখালী ইউনিয়নের বাসিন্দা আছিরন বিবি বলেন, রাত-দিন সব সময় আমাদের বাড়ির সামনের সড়ক দিয়ে বালু বোঝাই ট্রাক চলাচল করার কারনে বালুতে আমাদের ঘরবাড়ি ও আসবাবপত্র সব ধুলা বালিতে ঢেকে যায়। রাতভর এই ট্রাক চলাচলের শব্দে আমরা ঠিকমতো ঘুমাতে পারি না। শুধু তাই নয়, বাড়ির সামনের সড়কে ট্রাক চলাচলের সময় আমরা আতঙ্কে থাকি। এ ব্যাপারে সদরপুর থানার অফিসার্স ইনচার্জ মোঃ আঃ মোতালেব বলেন, আমরা অবৈধ যানবাহন বন্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি। ইতিমধ্যে মাটি বোঝাই ১২ টি ড্রাম ট্রাক জব্দ করে থানায় নিয়ে এসেছি। এদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা হয়েছে। অবৈধ যান চলাচল বন্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।