

খোলাকন্ঠ ডেস্ক রিপোর্টঃ
ফুল প্রকৃতির শ্রেষ্ঠ উপহার। তেমনি ঋতুরাজ বসন্তের একটি উপহার হচ্ছে শিমুল ফুল। বাংলাদেশের প্রায় সব অংশেই শিমুল ফুলের দেখা মেলে। তার মধ্যে এ বসন্তে আমাদের দেশের শহর কিংবা শহরতলী অথবা গ্রামের পথে প্রায়ই দেখা মেলে রক্তিম মনোলোভা শিমুল ফুলের। গাছ ভর্তি লাল টকটকে ফুলের কোন সৌরভ না থাকলেও রক্তিম সৌন্দর্যে মুগ্ধ হন না এমন ব্যক্তি বোধহয় খুব কমই মেলে। শিমুল আমাদের অত্যন্ত পরিচিত একটি ফুল। তাই শিমুল শব্দটা উচ্চারণ করলে সবার আগে এর রক্তরাঙা চেহারার কথাই নজরে ভাসে। ফাগুনের আগুন মানেই যেন শিমুল ফুল। উঁচু গাছের ডালে ডালে লাল আগুন ছাড়িয়ে তাবৎ মুগ্ধতা ছড়িয়ে শিমুল ফুল জানান দেয় বসন্তের। নিঃসঙ্গ পথের পাশে শিমুলের গাছ যেন অনন্য সৌন্দর্য। বোম্বাক্স গণের অন্তর্গত পাতাঝরা বৃক্ষ জাতীয় তুলা উৎপাদক উদ্ভিদ শিমুল। বাংলাদেশ, ভারত, চীন, মালোয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়ায় এ গাছ প্রচুর জন্মে। লম্বায় প্রায় ১৫-২০ মিটার হয়। এর শাখা-প্রশাখা অপেক্ষাকৃত কম। সরল ও বৃত্তাকারভাবে চারদিকে বিস্তৃত। বাকলে কাঁটা থাকে। কাঁটার অগ্রভাগ সরু ও তীক্ষ্ণ এবং গোড়া বেশ মোটা। শিমুল ফুল ঘন্টাকৃতির। পাঁচটি পাঁপড়ি থাকে। পাঁপড়ি ঘন,সুসজ্জিত। ফুলের ব্যাস ৫-৭ ইঞ্চি হতে পারে। পাঁপড়ি ৪ ইঞ্চি লম্বা। পাঁপড়ি বেশ পুরু। অতিরিক্ত পুরুত্বের কারণে শিমুল ফুলের ওজনও অনেক বেশি। একেকটা ফুলের ওজন ৩০-৫০ গ্রাম হবে। শিমুলই একমাত্র বৃক্ষ যার ডাল ফুলের ভারেই নুয়ে পড়ে। পাতার গঠন অনেকটা বোঁটায় ছড়ানো হাতের পাঞ্জার মতো। এর পাতা ৭-১১ সেন্টিমটার চওড়া হয়। শীতের শেষে এই গাছের পাতা ঝরে যায়। ফাল্গুন মাসে ফুলের কুঁড়ি আসে এবং চৈত্র মাসে বড় এবং উজ্জ্বল রঙের লাল ফুল ফোটে। এরপর গাছের পাতা গজানো শুরু হয়। ফুলের পাপড়ি ১০-১২ সেন্টিমিটার লম্বা হয়। এর পুংকেশের অনেক থাকে। এর স্ত্রীকেশর পুংকেশর অপেক্ষা লম্বায় বড় হয়। এর মোচাকৃতি ফল হয়ে বৈশাখ মাসে ফল পাকে এবং ফল ফেটে বীজ ও তুলা বের হয়ে আসে। বীজের রঙ কালো। শিমুল তুলা লেপ, তোষক ইত্যাদি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। এই গাছের অন্তত পাঁচটি প্রজাতি পাওয়া যায়। এগুলো হলো: রেশমি শিমুল, লাল শিমুল,কাপোক শিমুল,পাহাড়ি শিমুল, মোজাম্বিক শিমুল।