

মহিবউল্লাহ কিরন, বরগুনা জেলা প্রতিনিধিঃ
বরগুনার আমতলীতে মাত্র পাঁচটি কলাগাছ কাটা নিয়ে বিবাদ থামাতে গিয়ে চাচা, চাচাত ভাই এবং ভাতিজার বাঁশের লাঠির আঘাতে মো: আলমগীর প্যাদা (৪২) নিহত ও ২জন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে।
১২/৪/২৫ শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার সময় আমতলী উপজেলার আঠারগাছিয়া ইউনিয়নের ০৬ নং ওয়ার্ডের পশ্চিম সোনাখালী গ্রামে এঘটনা ঘটে।
নিহত আলমগীর প্যাদা ওই গ্রামের মৃত মোনসের আলী প্যাদার ছেলে। হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত হোচেন আলী প্যাদা নামে একজনকে আটক করেছে আমতলী থানা পুলিশ। অন্যরা পালিয়ে যায়,এঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, আঠারগাছিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম সোনাখালী গ্রামের মৃত তৈয়ব আলী প্যাদার ছেলে আবুল প্যাদা তার বাড়ীর দরজায় ৫টি কলাগাছ রোপন করেন। একই বাড়ির হাবিল প্যাদা ওই জমি তার দাবী করে দরজায় লাগানো ৫টি কলাগাছ বৃহস্পতিবার বিকেলে কেটে ফেলেন। এ নিয়ে শুক্রবার রাতে উভয়পক্ষ বাগবিতন্ডায় জড়িয়ে পরেন। বাগ বিতন্ডার শব্দ শুনে একই বাড়ির মৃত মোনসের আলী প্যাদার ছেলে আলমগীর প্যাদা ঘরের বাইরে এসে তাদের বাগবিতন্ডা থামানোর চেষ্টা করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে চাচা হোচেন প্যাদা, চাচাত ভাই হাবিল প্যাদা ও ভাতিজা শাহারুল প্যাদার নেতৃত্বে ১০-১২ জন মিলে বাঁশের লাঠি দিয়ে আলমগীর প্যাদার উপর হামলা শুরু করেন। হামলায় মাথায় আঘাত পেয়ে আলমগীর প্যাদা অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পরার পর হাবিল প্যাদা, হোচেন প্যাদা ও শাহারুল প্যাদা আলমগীর প্যাদার বুকে আঘাত করেন। তাকে রক্ষার জন্য ভাতিজা জুলহাস প্যাদা (২৮) এবং ভাতিজি শাহিনুর বেগম (৩২) এগিয়ে গেলে হাবিল প্যাদার লোকজন তাদেরকেও পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে জখম করেন।
তাৎক্ষনিক ভাবে তাদের আত্বীয় স্বজনরা গুরুতর আহত আলমগীর প্যাদা, জুলহাস প্যাদা ও শাহিনুর বেগমকে উদ্ধার করে পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। তাদেরকে হাসপাতালে নেওয়ার পর জরুরী বিভাগের চিকিৎসক আলমগীর প্যাদাকে মৃত্যু ঘোষনা করেন এবং জুলহাস ও শাহিনুর বেগমকে ওই হাসপালে ভর্তি করেন,তারা বর্তমানে সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ময়না তদন্ত সম্পন্ন করে শনিবার দুপুরে তার লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
শনিবার সকালে আমতলী থানার পুলিশ পশ্চিম সোনাখালী গ্রামে অভিযান চালিয়ে হত্যান্ডের সাথে জড়িত হোচেন প্যাদাকে তার বাড়ি থেকে আটক করেছে।
নিহত আলমগীর প্যাদার স্ত্রী নাসিমা বেগম বলেন, মোর স্বামী ঝগড়া থামাইতে যাওয়ায় হাবিল প্যাদা, তার বাপ হোচেন প্যাদা ছেলে শাহারুল প্যাদাসহ ১০-১২ জনে মিইল্যা পিডাইয়া মাইর্যা হালাইছে। মোর এহন কি দশা অইবে মুই ক্যাম্মে বাচমু। মোর প্যাডে ৫ মাসের বাচ্চা রইছে ও দুনিয়ায় আওনের আগেই ওর বাপেরে মাইর্যা হালাইছে এ কথা বলছিলেন আর বার বার কাঁদো কন্ঠে মুর্ছা যাচ্ছিলেন।
নিহত আলমগীর প্যাদার ছেলে দ্বীন ইসলাম বলেন, মোর বাপেরে বিনা দোসে হাবিল প্যাদা, হের বাপ হোচেন প্যাদা ও হ্যার পোলা শাহারুলসহ ১০-১২ জনে মিল্যা পিডাইয়া মাইর্যা হালাইছে। মুই এইয়ার কঠিন বিচার চাই।
আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: আরিফুল ইসলাম বলেন, হত্যাকান্ডের খবর পেয়ে আমি এবং আমতলী-তালতলী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলামকে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এঘটনায় হোচেন আলী প্যাদা নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। মামলার প্রস্ততি চলছে।