

মহিবউল্লাহ কিরন,বরগুনা জেলা প্রতিনিধিঃ
রাতে হঠাৎ বাবার বুকে তীব্র যন্ত্রণা হলে কিশোর ছেলেটি তাকিয়ে দেখলো চিকিৎসার অভাবে বাবা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লো। চোখের জল মুছতে মুছতে বাবার মরদেহ ঘরে রেখে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে চলে গেল এতিম খাইরুল বেপারী।
প্রতিদিন যে বাবা ছেলের পরীক্ষার জন্য হাত বাড়িয়ে পকেট থেকে টাকা দিত, বাবা কিছু খেয়ে নিস পরীক্ষা শেষে। আজ খায়রুল পরীক্ষা শেষ করে সেই হাত ধরে রাখতে হবে বাবার কবরে।
মর্মান্তিক ও হৃদয় বিদারক ঘটনা ঘটেছে বরগুনার বেতাগী উপজেলায়। খাইরুল বেতাগীর পুটিয়াখালী আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মানবিক বিভাগের এসএসসি পরীক্ষার্থী। বাবা আমজেদ বেপারী। তিন ভাই-বোনের মধ্যে খাইরুল সবার ছোট। খাইরুলের বাড়ি উপজেলার বিবিচিনি ইউনিয়নের ভাগলের পাড় গ্রামে।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, আমজেদ বেপারী (৬৩) মঙ্গলবার রাত ৩ টার দিকে হঠাৎ বুকে ব্যথা অনুভব করেন। কিছুক্ষণের মধ্যে তার হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যায়। খায়রুলের পরীক্ষা অংশগ্রহণের জন্য পরিবার ও এলাকাবাসীর সিদ্ধান্তে তার বাবা মৃত আমজেদ বেপারীর জানাজা বিকেল পাঁচটায় রাখা হয়।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) বাবার লাশ বাড়িতে রেখে খাইরুল পরীক্ষা দিতে যায় বিবিচিনি স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্রে। ৬ নম্বর কক্ষে পরীক্ষা অংশগ্রহণ করার সময় দেখা যায় খায়রুল ছিল শোকসন্তপ্ত। বুকে কষ্ট চেপে বসে পরীক্ষা দিচ্ছে।
খায়রুলের বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: বজলুর রহমান বলেন, ‘মৃত্যুর খবর শুনে আমি ওর বাড়িতে যাই। তাকে মানসিকভাবে সান্তনা দেই। খাইরুলকে সাহস যুগিয়ে পরীক্ষায় অংশ করানোর মানসিকতা তৈরি করি।
বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি মো: বশির গাজী বলেন,‘খাইরুলের বাবার মৃত্যুর খবর আমরা পেয়েছি। সে যেন বাকী সবকটি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারে এবং ভালোভাবে পরীক্ষা দিতে পারে সে জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে খোঁজখবর রাখা হবে।